রামপুরায় ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ
রামপুরায় ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ
ডেমরা প্রতিনিধিনগরীর রামপুরায় অপরিকল্পিকত ও অপ্রশস্ত সড়কে যানজট লেগেই থাকে। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। ওয়াসার পানিতেও মারাত্মক দুর্গন্ধ। এছাড়াও স্থায়ী কাঁচাবাজার না থাকায় সড়কের পাশে বা দোকানগুলোতে মাছ, মাংস ও কাঁচামাল বিক্রি করেন দোকানিরা। এতেও সড়কে যানজটসহ নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ২২ নম্বর ওয়ার্ডভুক্ত পূর্ব ও পশ্চিম রামপুরার অভ্যন্তরীণ অধিকাংশ সড়ক প্রশস্ত ও পরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠেনি। তাই ব্যস্ততম এ এলাকায় জনসংখ্যা ও যানবাহন বাড়লেও সে অনুযায়ী সড়ক প্রশস্ত হয়নি। এসব সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে। তবে পশ্চিম রামপুরায় বেশ কিছু রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে। বনশ্রীসহ উলন এলাকায় এখনও রাস্তার কাজ চলছে। রামপুরার ভেতরের সড়কে পণ্য ও যাত্রীবাহী কোনো বড় যানবাহন চলাচল করতে পারে না। আর ছোট ছোট যানবাহন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা বেশি চলায় সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট থাকে। এতে শিক্ষার্থী, পথচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ সমস্যায় পড়েন। তাছাড়া ওয়ার্ডটিতে স্থায়ী কোনো কাঁচাবাজার না থাকায় সড়কের পাশে একাধিক স্থানে অবৈধভাবে বসেছে তরিতরকারি ও মাছের দোকান। আর সড়ক দখল করে ভ্যানগাড়ি দোকান যেন বিষফোঁড়া। তাই দৈনন্দিন বাজারের জন্য বাসিন্দাদের পোহাতে হচ্ছে নানা দুর্ভোগ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে স্থায়ী কাঁচাবাজার না থাকায় এখানকার উলন রোড, ওয়াপদা রোড, পূর্ব রামপুরা রোড, টিভি টাওয়ার রোড, পূর্ব রামপুরার হাজীপাড়া ও মোল্লাবাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে বসেছে বাজার। এতে একদিকে ক্রেতাদের কিছুটা উপকার হলেও চারপাশে ধুলাবালি ও দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশ বিরাজ করে। ফলে অপ্রশস্ত অভ্যন্তরীণ সড়কে পথচারী ও আশপাশের বাসিন্দাদের চলাচল মারাত্মক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এখানে বিশুদ্ধ পানির অভাবে প্রতিনিয়ত বাসিন্দারের প্রি-পেইড কার্ডভিত্তিক বিশুদ্ধ পানি কিনতে হচ্ছে। এছাড়া ওয়াসার পানিতেও মারাত্মক দুর্গন্ধ। তাই ওয়াসার পানি কিছুতেই পান করা যায় না। তবে পানি দীর্ঘ সময় ধরে ফুটালে মাঝে মধ্যে পান করা যায়।
পূর্ব রামপুরা টিভি রোড এলাকার বাসিন্দা মো. শাবর যুগান্তরকে বলেন, প্রায়ই ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ আসে বলে সাধারণত এ পানি পান করা যায় না। আর অন্যান্য ব্যবহার্য কাজেও ওয়াসার পানি ফুটাতে হয়। তাই বিশুদ্ধ পানির অভাব পূরণ করতে অতিরিক্ত খরচ করে প্রি-পেইড কার্ডের মাধ্যমে পানি কিনে পান করতে হয়।
এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, রামপুরায় মশার উপদ্রব রয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল। নেই একটি খেলার মাঠ, গড়ে ওঠেনি কোনো কমিউনিটি সেন্টার, নেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শরীর চর্চা ও স্বাস্থ্য রক্ষায় নেই ব্যায়ামাগার, শিশু-কিশোরদের জন্য নেই পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র। সরেজমিন দেখা গেছে, পূর্ব রামপুরার টিভি লিংক রোড, টিভি রোড ও কুঞ্জবন ও হাজীপাড়া রোড কিছুটা প্রশস্ত থাকলেও বাকি অন্যান্য রাস্তা প্রায় সবই সরু। জাকের রোড, শহিদ শাহাদাৎ রোড, জামতলা গলি ও কমিশনার গলির রাস্তা ১২ থেকে ১৪ ফুটের বেশি নয়। এসব সড়কে রিকশা একটু বেশি চললেই যানজট সৃষ্টি হয়। মোল্লাবাড়ী (পুষ্পশ্রী আবাসিক এলাকা) এলাকায় রাস্তার পাশেই গড়ে উঠেছে অস্থায়ী মাছ ও কাঁচাবাজার। কিন্তু সড়কটি ১৪ ফুটের বেশি নয়। তাই এখানে প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকে।
পুরাতন পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে কবরস্থান ও মনোয়ারা মসজিদ হয়ে ইষ্টার্ন বনশ্রী পর্যন্ত প্রায় পৌনে ১ কিলোমিটার সড়কের সুষ্ঠু স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাসহ উন্নয়ন জরুরি। পশ্চিম রামপুরায় শিমুলবাগ এলাকায় আধা কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন জরুরি। অগ্নিশিখা গলি এলাকায় অন্তত ৫শ’ ফুট রাস্তার দ্রুত উন্নয়ন প্রয়োজন। কারণ এসব রাস্তা সরু। শহিদ শাহাদাৎ রোড এলাকার বাসিন্দা মো. ফারুক হোসেন যুগান্তরকে বলেন, রাস্তার পাশেই নোংরা পরিবেশে বাজার করতে হয়। হাঁটাচলা করা যায় না। তাই ২২ নম্বর ওয়ার্ডটিতে দ্রুত একটি স্থায়ী বাজারের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
ডিএনসিসি ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. লিয়াকত আলী যুগান্তরকে বলেন, ওয়ার্ডে একটি কাঁচাবাজারের জন্য ঊর্ধ্বতন মহলে আবেদন জানানো হয়েছে। এখানকার কিছু রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে। তবে অনেক আগেই এ ওয়ার্ডে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করেছেন অধিবাসীরা। আর রাস্তার জায়গা কম রেখেই এসব বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এখন অধিবাসীরা নিজ উদ্যোগে যদি রাস্তা ছাড়েন তাহলেই অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলো প্রশস্ত করা সম্ভব হবে।
from JUGANTOR https://jugantor.com/todays-paper/city-news/237061/রামপুরায়-ওয়াসার-পানিতে-দুর্গন্ধ
https://ift.tt/eA8V8J
রামপুরায় ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ
ডেমরা প্রতিনিধিনগরীর রামপুরায় অপরিকল্পিকত ও অপ্রশস্ত সড়কে যানজট লেগেই থাকে। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। ওয়াসার পানিতেও মারাত্মক দুর্গন্ধ। এছাড়াও স্থায়ী কাঁচাবাজার না থাকায় সড়কের পাশে বা দোকানগুলোতে মাছ, মাংস ও কাঁচামাল বিক্রি করেন দোকানিরা। এতেও সড়কে যানজটসহ নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ২২ নম্বর ওয়ার্ডভুক্ত পূর্ব ও পশ্চিম রামপুরার অভ্যন্তরীণ অধিকাংশ সড়ক প্রশস্ত ও পরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠেনি। তাই ব্যস্ততম এ এলাকায় জনসংখ্যা ও যানবাহন বাড়লেও সে অনুযায়ী সড়ক প্রশস্ত হয়নি। এসব সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকে। তবে পশ্চিম রামপুরায় বেশ কিছু রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে। বনশ্রীসহ উলন এলাকায় এখনও রাস্তার কাজ চলছে। রামপুরার ভেতরের সড়কে পণ্য ও যাত্রীবাহী কোনো বড় যানবাহন চলাচল করতে পারে না। আর ছোট ছোট যানবাহন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা বেশি চলায় সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট থাকে। এতে শিক্ষার্থী, পথচারীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ সমস্যায় পড়েন। তাছাড়া ওয়ার্ডটিতে স্থায়ী কোনো কাঁচাবাজার না থাকায় সড়কের পাশে একাধিক স্থানে অবৈধভাবে বসেছে তরিতরকারি ও মাছের দোকান। আর সড়ক দখল করে ভ্যানগাড়ি দোকান যেন বিষফোঁড়া। তাই দৈনন্দিন বাজারের জন্য বাসিন্দাদের পোহাতে হচ্ছে নানা দুর্ভোগ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে স্থায়ী কাঁচাবাজার না থাকায় এখানকার উলন রোড, ওয়াপদা রোড, পূর্ব রামপুরা রোড, টিভি টাওয়ার রোড, পূর্ব রামপুরার হাজীপাড়া ও মোল্লাবাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে বসেছে বাজার। এতে একদিকে ক্রেতাদের কিছুটা উপকার হলেও চারপাশে ধুলাবালি ও দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশ বিরাজ করে। ফলে অপ্রশস্ত অভ্যন্তরীণ সড়কে পথচারী ও আশপাশের বাসিন্দাদের চলাচল মারাত্মক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এখানে বিশুদ্ধ পানির অভাবে প্রতিনিয়ত বাসিন্দারের প্রি-পেইড কার্ডভিত্তিক বিশুদ্ধ পানি কিনতে হচ্ছে। এছাড়া ওয়াসার পানিতেও মারাত্মক দুর্গন্ধ। তাই ওয়াসার পানি কিছুতেই পান করা যায় না। তবে পানি দীর্ঘ সময় ধরে ফুটালে মাঝে মধ্যে পান করা যায়।
পূর্ব রামপুরা টিভি রোড এলাকার বাসিন্দা মো. শাবর যুগান্তরকে বলেন, প্রায়ই ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ আসে বলে সাধারণত এ পানি পান করা যায় না। আর অন্যান্য ব্যবহার্য কাজেও ওয়াসার পানি ফুটাতে হয়। তাই বিশুদ্ধ পানির অভাব পূরণ করতে অতিরিক্ত খরচ করে প্রি-পেইড কার্ডের মাধ্যমে পানি কিনে পান করতে হয়।
এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, রামপুরায় মশার উপদ্রব রয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল। নেই একটি খেলার মাঠ, গড়ে ওঠেনি কোনো কমিউনিটি সেন্টার, নেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শরীর চর্চা ও স্বাস্থ্য রক্ষায় নেই ব্যায়ামাগার, শিশু-কিশোরদের জন্য নেই পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র। সরেজমিন দেখা গেছে, পূর্ব রামপুরার টিভি লিংক রোড, টিভি রোড ও কুঞ্জবন ও হাজীপাড়া রোড কিছুটা প্রশস্ত থাকলেও বাকি অন্যান্য রাস্তা প্রায় সবই সরু। জাকের রোড, শহিদ শাহাদাৎ রোড, জামতলা গলি ও কমিশনার গলির রাস্তা ১২ থেকে ১৪ ফুটের বেশি নয়। এসব সড়কে রিকশা একটু বেশি চললেই যানজট সৃষ্টি হয়। মোল্লাবাড়ী (পুষ্পশ্রী আবাসিক এলাকা) এলাকায় রাস্তার পাশেই গড়ে উঠেছে অস্থায়ী মাছ ও কাঁচাবাজার। কিন্তু সড়কটি ১৪ ফুটের বেশি নয়। তাই এখানে প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকে।
পুরাতন পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে কবরস্থান ও মনোয়ারা মসজিদ হয়ে ইষ্টার্ন বনশ্রী পর্যন্ত প্রায় পৌনে ১ কিলোমিটার সড়কের সুষ্ঠু স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাসহ উন্নয়ন জরুরি। পশ্চিম রামপুরায় শিমুলবাগ এলাকায় আধা কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন জরুরি। অগ্নিশিখা গলি এলাকায় অন্তত ৫শ’ ফুট রাস্তার দ্রুত উন্নয়ন প্রয়োজন। কারণ এসব রাস্তা সরু। শহিদ শাহাদাৎ রোড এলাকার বাসিন্দা মো. ফারুক হোসেন যুগান্তরকে বলেন, রাস্তার পাশেই নোংরা পরিবেশে বাজার করতে হয়। হাঁটাচলা করা যায় না। তাই ২২ নম্বর ওয়ার্ডটিতে দ্রুত একটি স্থায়ী বাজারের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
ডিএনসিসি ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. লিয়াকত আলী যুগান্তরকে বলেন, ওয়ার্ডে একটি কাঁচাবাজারের জন্য ঊর্ধ্বতন মহলে আবেদন জানানো হয়েছে। এখানকার কিছু রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে। তবে অনেক আগেই এ ওয়ার্ডে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করেছেন অধিবাসীরা। আর রাস্তার জায়গা কম রেখেই এসব বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এখন অধিবাসীরা নিজ উদ্যোগে যদি রাস্তা ছাড়েন তাহলেই অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলো প্রশস্ত করা সম্ভব হবে।
No comments: